ডেস্ক নিউজ : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়কে কেন্দ্র করে পুরো জাতি আজ উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও ক্রুদ্ধ। আমরা মনে করি, এটা গভীর ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য।
গুলশানে শনিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। রাত ১১টার দিকে বৈঠক শেষে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি শুধু একটি রেজ্যুলেশন আপনাদের সামনে পড়ে শোনাব। ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে বৃহস্পতিবার বিবাদীপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য হঠাৎ সমাপ্ত ঘোষণা করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়। উপস্থিত প্রবীণ আইনজীবীদের মতে, এমন ঘটনা শুধু অপ্রত্যাশিত ও অস্বাভাবিক নয়, রহস্যজনক।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জাতীয় নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার জন্য দ্রুত রায় ঘোষণাকে সেই অপচেষ্টা অংশগুলোই দেশবাসী মনে করে। সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে গত কয়েকদিন ধরে সরকারের মন্ত্রীগণ এবং বিশেষ দূত (জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) এই মামলার রায় এবং তার পরবর্তী সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়ে সরকার এবং সরকারি দলের বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা যে ভাষায় বলে চলেছেন তাতে প্রমাণিত হয় যে মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকলেও তার রায় কী হবে তা সরকার এবং সরকারি দলের জানা আছে বলেই মনে হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে জাল-জালিয়াতি করে বিচারের নামে প্রহসন এবং বিরোধীপক্ষকে দমন করার জন্য আদালতকে ব্যবহার করার একটি নোংরা দৃষ্টান্ত স্থাপিত হতে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ এবং আইনের শাসন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এমন আচরণে দেশের জনগণ আজ ক্ষুব্ধ এবং ক্রুদ্ধ।
তিনি বলেন, একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন, যেটা জাতি আশা করছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সকলের অংশগ্রহণে সেটাকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করি।
বিএনপির আজকের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ কয়েকজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দিয়ে সরকারের আইন ও আদালতের নিয়ম-নীতির বিরুদ্ধ আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এ ব্যাপারে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে বিচারের নামে সরকারি ষড়যন্ত্রের নামে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
শেষে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখিত বক্তব্য শেষ করেন মির্জা ফখরুল।
এর আগে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে দলের নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়েও আওয়ামী লীগ আগের অবস্থানেই রয়েছে। ফলে এসব বিষয়ে দলের নীতিনির্ধারকদের সাথে আলোচনা করে দলের করণীয় নির্ধারণ করতেই মূলত সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটির বৈঠক বসেন তিনি।